ঋণ নিয়ে বিতর্ক

ভারতের জন্য আইএমএফের সার্বভৌম ঋণ সংক্রান্ত ঝুঁকির মূল্যায়ন থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে

Published - December 26, 2023 09:36 am IST

গত শুক্রবার অর্থ মন্ত্রকের তরফ থেকে ‘ফ্যাকচুয়াল পজিশন ভিস-এ-ভিস আইএমএফ’স অনুচ্ছেদ IV কনসাল্টেশন উইথ ইন্ডিয়া’ শিরোনামের একটি বিবৃতি ইস্যু করেছে। প্রসঙ্গের জন্য, ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড (আইএমএফ), নিজেদের চুক্তির অনুচ্ছেদ অধীনে, সদস্যদের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার আয়োজন করে, সাধারণত প্রত্যেক বছর এটি অনুষ্ঠিত হয়। আইএমএফের কর্মীরা ফান্ডের এগজিকিউটিভ বোর্ড দ্বারা আলোচনা করার জন্য একটি রিপোর্ট প্রস্তুত করার আগে অর্থনৈতিক এবং ফিনান্সিয়াল তথ্য সংগ্রহ করেন এবং শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সাথে নীতি সংক্রান্ত আলোচনা করেন। আইএমএফ তাদের সর্বশেষ ভারত কনসাল্টেশন সংক্রান্ত বিশদ বিবরণ প্রকাশ করার চার দিন পরে মন্ত্রকের তরফ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, কিছু কিছু কাল্পনিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা বাস্তবে দেখা যায় না। বিশেষত মন্ত্রকের তরফ থেকে আইএমএফের মতামতের দিকে ইঙ্গিত করা হচ্ছিল, যেখানে বলা হয়েছে যে, প্রতিকূল পরিবেশের কারণে ভারতের সাধারণ সরকারি ঋণ মিডিয়াম-টার্মে (২০২৭-২৮) বাড়তে পারে বা জিডিপির ১০০% অতিক্রম করতে পারে। মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, এটা একটা সম্ভাবনা এবং আদৌ বাস্তবের সাথে এখনও এর প্রাসঙ্গিকতা কিছু নেই। বরং অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে আইএমএফের রিপোর্টে আরও খারাপ সম্ভাবনার কথা প্রকাশ করা হয়েছে, যেমন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং চিনের ক্ষেত্রে যথাক্রমে জিডিপির ১৬০%, ১৪০% এবং ২০০%।

কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের সম্মিলিত ঋণের পরিমাণ ২০২০-২১ সালে ছিল জিডিপির ৮৮%, যা ২০২২-২৩ বর্ষে ৮১%-এ রয়েছে। অনুকূল পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে, আইএমএফ মনে করে, এটি ২০২৭-২৮ সাল নাগাদ ৭০%-তে পৌঁছাতে পারে। ভারত এই শতকে যে সব সমস্যা বা প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল, সেগুলো ছিল মূলত আন্তর্জাতিক এবং গোটা বিশ্বের অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলেছে। তা ২০০৮ সালের আর্থিক মন্দা হোক বা মহামারি। অর্থ মন্ত্রকের তরফ থেকে এটা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রারম্ভিক সংবাদের ঝলকে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তাদের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, এটি আইএমএফের রিপোর্টের পাল্টা যুক্তি বা জবাব নয়। বরং, মিডিয়াম টার্মে সাধারণ সরকারি ঋণের পরিমাণ জিডিপির ১০০% অতিক্রম করবে বলে যে দাবি করা হয়েছে, সেই ব্যাপারে তৈরি হওয়া ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে এই প্রচেষ্টা। ভাষা বিশারদরা বলতে পারবেন যে বার্তাটি বিরোধমূলক ছিল, না কি ব্যাখ্যামূলক। আইএমএফ বোর্ডে থাকা ভারতের ডিরেক্টরের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই ঋণ সংক্রান্ত ঝুঁকির [“মনে হচ্ছে অত্যন্ত বিপজ্জনক”] ব্যাপারে তাদের স্টাফের আনুষ্ঠানিকভাবে অসম্মতি এবং অর্থনীতির কিছু অন্য দিকের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করা হয়েছে। বৃহত্তর ছবিতে, ভারতের ফিস্ক্যাল পজিশনের ব্যাপারে আইএমএফ স্টাফের ধারনা গত বছরের তুলনায় উন্নত হয়েছে। ২০২২ সালে বলা হয়েছিল যে ভারতের ফিস্ক্যাল স্পেস ঝুঁকির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে, তবে তারা এখন মনে করে, সার্বভৌম ঝুঁকিগুলো মধ্যম মানের। এটা কেন্দ্রের সামর্থ্যের কারণে কোনো ক্ষুদ্র অংশ নয়, যাদের ঋণের লেভেল গত বছর ছিল জিডিপির প্রায় ৫৭%, সাম্প্রতিক সময়ে ফিস্ক্যাল ঘাটতির টার্গেট পূরণ করার জন্য। ঋণ এবং খরচ কমিয়ে ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির ৪.৫%-এর মধ্যে রাখার জন্য যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, যা এই বছর আনুমানিক ৫.৯% হতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছিল, তা পূরণ করা বেশ কঠিন ব্যাপার। অনেক সময় কোনো রিপোর্টের ব্যাপারে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে, সামগ্রিকভাবে বিষয়টি নিয়ে অনেক বেশি মনযোগ তৈরি হয়, কথাবার্তার চেয়ে পদক্ষেপের পাল্লা সব সময় বেশি ভারী হয়ে থাকে।

0 / 0
Sign in to unlock member-only benefits!
  • Access 10 free stories every month
  • Save stories to read later
  • Access to comment on every story
  • Sign-up/manage your newsletter subscriptions with a single click
  • Get notified by email for early access to discounts & offers on our products
Sign in

Comments

Comments have to be in English, and in full sentences. They cannot be abusive or personal. Please abide by our community guidelines for posting your comments.

We have migrated to a new commenting platform. If you are already a registered user of The Hindu and logged in, you may continue to engage with our articles. If you do not have an account please register and login to post comments. Users can access their older comments by logging into their accounts on Vuukle.